#বর্ষণ_সন্ধ্যায়_তোমার_আগমণ,,
#পর্ব_১০
নিশাত বলল-
"তুই প্রেমে পড়েছিস সানজিদার"
নওশাদ ভাবলেশহীন ভাবে বলল—
"প্রেমেই তো পড়েছি,মেনহোল এ তো না"
"প্রেমে পড়ে দেবদাস হয়ে যাচ্ছো কিন্তু বন্ধুকে বলতে পারছো না,তুমি তো মামা বড্ড খারাপ। "
নওশাদ নিবিড় এর দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকালো।নিবিড় ভেবাচেকা খেয়ে বলল-
"আমি কিছু করিনি, নিশুনি আমাকে বুঝিয়েছে। "
নিশু নিজের দিকে তীর আসতে দেখে, কেটে পড়ার জন্য উঠে দাড়ালো আরেকটু পড় নাহলে তাকে পৃথিবী থেকে বিদেয় নিতে হবে।সবার হাবভাব দেখে নওশাদ ধমকে উঠলো-
"এই তোদের আমি মেরেছি না কেটেছি এভাবে পালাচ্ছিস কেন?বল তাড়াতাড়ি কেমনে বুঝলি.?আমি তো কাউকে বুঝতে দিই নাই।"
নিশাত বিরক্তিকর কন্ঠে বলল-
"তুমি দেবদাস হবা আর আমরা বুঝলে দোষ?"
"ধুর, বলি একটা উত্তর দে আরেকটা।"
"আচ্ছা বাদ দে তো,বুঝলাম একভাবে এখন বল, কিভাবে পটাবি? "
"পটাইতে হবে কেন সোজা তুলে বিয়ে করবো।"
নিশাত ছেলেটার কোথায় বিরক্ত হলো,এই মেয়ে যে ভয়ংকর, আর তাঁর বন্ধু এখানে এইগুলো আজাইরা কথা বলে শুধু শুধু মুড খারাপ করতেছে।
তখনই তাসফিয়া বলল-
"নওশাদ ভাই তুমি একটা কাজ করতে পারো।"
"কি? "
"দাদুমুনি কে বলতে পারো, ওনার কথা সানজিদা খুব মান্য করে।"
নিবিড় চিৎকার করে বলল-
"গ্রেট আইডিয়া"
নিশু বিরক্ত চোখে তাকালো।নওশাদ হাসলো সেও এটাই ভাবছিলো,সবাই কে নিচে দিতে তাগড়া দিয়ে সে ছাদের অন্য পাশে যাওয়ার জন্য হাঁটা দিলো।সবার আগে তাসফিয়া আর নিশাত নেমে গেল। নিশু নিচে যেতে নিতেই নিবিড় হাত টেনে ধরলো।
________________________
"তোর সাথে কথা আছে।"
নিশুর বুকটা কেপে উঠলো কি বলতে চায় ছেলেটা সেটা সে জানে, কিন্তু পরিবার মানবে না যা তা তো আর সে করতে পারবে না।তাই স্বাভাবিক ভাবে বলল—
"আমি ঘুমাবো নিবিড়, কাল বলিস।"
"তুই বার বার এড়িয়ে যাচ্ছিস কেন?আমি যত বার বলতে চেয়েছি ততবার কোন অজুহাত দেখিয়ে চলে গেছিস কেন?"
"তুই জানোস না কেন?আমি তোর থেকে দুইমাসের বড় নিবিড় কেউ মানবে না।"
"কিন্তু আমি যে তোকে ভালোবাসি, আমি ভাইয়া কে বলেছি ভাইয়া কথা দিছে নিশাত ভাইয়ার সাথে কথা বলবে এই ব্যাপারে।"
নিশু ফুপিয়ে উঠে বলল-
"তুই বুঝছিস না কেউ মানবে না কেউ না।"
নিবিড় মেয়েটার কাছে এসে একহাতে জড়িয়ে নিলো,আরেক হাতে মেয়েটার এলো চুল গুলো গুছিয়ে দিতে দিতে বলল-
" আমার উপর বিশ্বাস রাখ।"
নিশু চুপ করে প্রিয় পুরুষ এর বুকে লেপ্টে রইলো। সময় পেরেলো,নিবিড় হঠাৎ বলল-
"এই অধমের কি ভালোবাসি শুনার অধিকার নেই?"
নিশু অস্ফুট স্বরে বলল-
"ভালোবাসি "
"আমিও"
নিবিড় মেয়েটাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো যেনো ছেড়ে দিলেই হারিয়ে যাবে।
________________________
সানজিদা নিজের ফোনটা উপরে রেখে গিয়েছিল, ফোনটা নিতে এসে এমন একটা দৃশ্য দেখে ঘাবড়ে গেলেও তখনি তাকে পিছন থেকে কেউ টেনে নিয়ে ছাঁদের অন্য পাশে নিয়ে এলো।সানজিদা সামনে নওশাদকে দেখে ভয় পেল,ভাবতে লাগলো নওশাদ কি সব দেখেছে.?তাহলে যদি সমস্যা হয়।নিবিড় এর ক্লোজ ফ্রেন্ড হওয়ায় ও নিশুর ব্যাপারে সব জানতো।নিবিড় নওশাদকে খুব ভয় পেত তাই বলেছিল সে মরে গেলেও নওশাদ কে বলবে না। সানজিদার ভীতি নজর দেখে নওশাদ বলল-
"রিলাক্স আমি সবটাই জানি,তাই ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই।"
সানজিদা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো, নওশাদ বলল-
"নিবিড় একবার নিশুর ছবি দেখতে গিয়ে আমার সামনে পড়েছিল, প্রথমে ভয় পেয়েছিল পরে বলেছে। আমি তাকে একটা কথাই বলেছিলাম ভালোবাসা একটা অনুভূতি এটা বয়স মানে না বুঝে না।"
"তুমি অনেক ভালো নওশাদ ভাই।"
"তুমি এতো রাতে ছাদে কেনো এসেছিলে?"
নওশাদ এর কথায় তার আসল কথা মনে পড়লো।তাই হতাশার সুরে বলল-
"আমার ফোনটা ফেলে গিয়েছিলাম, ঐখানেই আছে। কিন্তু কিভাবে নিবো।"
নওশাদ সানজিদার ফোনটা তার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল-
"এটা…?"
"হু, ধন্যবাদ তোমায়,নাহলে আজ দাড়িয়ে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে হতো ওদের ভালোবাসা শেষ হওয়ার।আচ্ছা আমি যাই শুভ রাত্রি। "
বলেই সিঁড়ির দিকে পা বাড়ালো, নওশাদ অনমনেই হাসলো অস্ফুট স্বরে বলল-
" তোমাকেও সানফ্লাওয়ার "
#চলবে,,,